বাংলাদেশ দণ্ডবিধি, ধারা ৩৭৭

প্রথমেই উপরিউক্ত ধারাটা সম্বন্ধে একটা ধারণা নেয়া যাক।  আপনি যদি এই ধারাটা অনলাইন এ সার্চ করে ওপেন করেন, তাহলে সহসাই যেই সবযুগল চোখে পর্বে টা হলো ‘unnatural offences’।

তো, বাংলাদেশ সরকারের বিধি অনুযায়ী এই বিধিটা একটা ‘অপ্রাকৃতিক অপরাধ’ সম্পর্কিত। এখন আশা যাক সম্পূর্ণ বিধিতে। ‘কেউ যদি স্বদিচ্ছায় প্রকৃতির বিরুদ্ধে কোনো নারী , পুরুষ বা পশুর সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে থাকে তাকে কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে যা ১০ বছর পর্যন্ত প্রসারিত হতে পারে এবং সে জরিমানা দিতেও বাধ্য থাকবে।’ এবং ফুটনোটে ‘শারীরিক সম্পর্ক’ কে ক্লারিফাই করে বলা হয়েছে অপরাধ হিসেবে গণ্য করার জন্য  লিঙ্গ অনুপ্রবেশই  যথেষ্ট।

এই ধারাটা অনেক আগেই ‘বিতর্কিত’ এই পদবীটা জিতে নিয়েছে।  আমরা দেশ হিসেবে কতটা পিছিয়ে, চিন্তা করুন।  ২০০৯ এবং ২০১৩ তে বাংলাদেশ পার্লামেন্ট এই ধারাটা পরিবর্তন প্রত্যাখ্যান করে। আমরা ইসলামিক রাষ্ট্র বলে, সায়েন্টিফিক্যালি স্বাভাবিক একটা আচরণ মেনে নিতে পারছিনা। আবার আমার দেশেই হুজুর তার মাদ্রাসার ছাত্রকে ধর্ষণ করছে , প্রতিদিন নিজের পরিবারের সদস্যদের দ্বারা ঘরে ঘরে মেয়েদের সম্ভ্রমহানি হচ্ছে , আবার একটা মেয়ে প্রতিবাদ করলে তাকেই দোষী সাব্যস্ত করা হচ্ছে তার পোশাকের দোহাই দিয়ে।  একজন আসি বছর বৃদ্ধা, একজন দুই বছরের শিশু তাদেরকেও ছাড়ছে না। একটাবার চিন্তা করুন ‘হিপোক্রেসি’ ব্যাপারটা আমাদের রক্তের সাথে কিভাবে মিশে গিয়েছে।

ট্রান্সজেন্ডার মানুষগুলো আর দোষটা নারী বা পুরুষেরই মতন। এই বেপারগুলো তো বিওলজিক্যালয় নরমাল।  বা অন্তত বুঝতে এতটা কষ্ট হওয়ার কথা না।  তাহলে কেন আমাদের দেশের ‘থার্ড জেন্ডার ‘ স্বীকৃতি দিতে ২০১৪ পর্যন্ত আসতে হলো।

এখন একটু আমরা ‘অপ্রাকৃতিক’ এই শব্দটায় দৃষ্টিপাত করি।  প্রাকৃতিক শব্দটার আক্ষরিক অর্থ হলো যা কিছু প্রকৃতিতে ঘটে, উদ্ভিদ এবং পশুপাখিদের মধ্যে।  আপন আপনাকে এইটা সাজেস্ট করছি না যে আমরা পশুদের মতন।  আমরা পশুদের মতন না।  আমরা অনেক কাজ এ করি যা প্রাকৃতিক না -যেমন আমরা পড়াশুনা করি , আমরা কাপড়চোপড় পড়ি, আমরা বিয়ে করি।  এই কাজগুলোর কোনোটাই প্রাকৃতিক না।  আমরা এই অপ্রাকৃতিক বিষয়গুলোর বিরুদ্ধে কখনোই যাই না , কারণ ব্যাপারটা হাস্যকর।

মানুষ হিসেবে আমাদের একটা ভুল ধারণা সহসাই হয়ে থাকে যা হলো , প্রাকৃতিক সবকিছুই ভালো।  ধারণাটা ভুল।  কারণ সায়ানাইড একটা বিষ এবং টা প্রাকৃতিক।  সুতরাং প্রাকৃতিক সব কিছুই মানুষের জন্য ভালোনা।  তো আমাদের এই যুক্তিটা টিকলো না।

এখন দেখা যাক হোমোসেক্সচুয়ালিটি, বাইসেক্সচুয়ালিটি এই বিষয়গুলো প্রাণিজগতে পাওয়া যায় কি না।  ১৫০০ এর ও বেশি প্রজাতির মধ্যে বাইসেক্সচুয়ালিটি এবং হোমোসেক্সচুয়ালিটি র রেকর্ড রয়েছে।  জিরাফ, ডলফিন, হাতি, সিংহ এমনকি ড্রাগনফ্লাইয়ের মধ্যেও এর নজির রয়েছে।  এমনকি আমাদের নিকটতম পূর্বপুরুষ শিম্পাঞ্জি, ওরাং ওটাং, বোনোবো এদের প্রত্যেকটা প্রজাতির মধ্যেই এই সেক্সচুয়াল ওরিয়েন্টেশন দেখা যায়।  শুধু তাই নয় ,বোনোবোদের বেশিরভাগই বাইসেক্সচুয়াল এবং ৬০ % সহবাসের আচরণ লক্ষণীয় দুইটি মেয়ে বোনোবোর মাঝে। তাহলে বিষয়টা পরিষ্কার যে, হোমোসেক্যুয়ালিটি এবং বাইসেক্সচুয়ালিটি বেপারগুলো সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক এবং স্বাভাবিক।

যেই জিনিষটা অপ্রাকৃতিক, তা হলো সত্যটা সামনে দেখেও তা মেনে না নেয়ার মানসিকতা। যে কোনো বিজ্ঞানসম্মত ব্যক্তির পক্ষে বাংলাদেশ সরকারের এই আইনটা মেনে নেয়া সম্ভব নয়।


Comments

16 responses to “বাংলাদেশ দণ্ডবিধি, ধারা ৩৭৭”

  1. সিরাজুল ইসলাম Avatar
    সিরাজুল ইসলাম

    তোর জন্য অপেক্ষা করছে অনন্ত আগুন আর চাপাতির কোপ

  2. রাজিবুল ইসলাম Avatar
    রাজিবুল ইসলাম

    লন্ডনে থাইকা বাল ফালাও? বালের লেখক হইসো? ওইখানে তো বাসন মাজো, দেশে আইসা কিছু কইরা দেখাও

  3. সেলিম হায়দার Avatar
    সেলিম হায়দার

    দাদা আপনি এইসব লেখে কি আনন্দ পান। মানুষকে কষ্ট দেন কেন?

  4. riadh uddin Avatar
    riadh uddin

    আসলে এই সময়ে র‍্যাশনাল চিন্তার কোন স্থানই মনে হয় নেই। সবাই কেমন জানি খুব উগ্র হয়ে যাচ্ছে

  5. রহিম উল্ল্যাহ Avatar
    রহিম উল্ল্যাহ

    কুত্তারবাচ্চা তোরা তো সব নাস্তিকের দল। তোরা কাদের র‍্যাডিকাল বলিস? আমাদের। কাফেরের বাচ্চা উগ্রতা তোদের মধ্যে বেশী। তোরা র‍্যাশনাল সূত্রের নাম করে উগ্রতা ছড়িয়ে দিস চালাকি করে

  6. সিরাজুল ইসলাম Avatar
    সিরাজুল ইসলাম

    আমাদের আইন্সার আল ইসলামের সৈনিকরা তোদের গলা কাটতে আসছে। যেমন কেটেছিলো অভিজিতের

    তুই বাঁচতে পারবিনা, তোরও পরিণতি অভিজিতের মতন হবে

  7. রায়হান আলম Avatar
    রায়হান আলম

    ভালো লাগলো আপনার ভাবনা।

  8. মিনহাজ Avatar
    মিনহাজ

    তোকে কোপাতে কোপাতে টুকরা টুকরা করা হবে। সেই মাংশ খাবে কুত্তারা

  9. রাজিবুল ইসলাম Avatar
    রাজিবুল ইসলাম

    কোপানি দিলে সব ঠিক হইয়ে যাবে

  10. Rajiv Haldar Avatar
    Rajiv Haldar

    কাফেরের বাচ্চারা দেখি এখন র‍্যাডিকাল আর র‍্যাশনাল ব্যাপার স্যাপার নিয়ে চিন্তিত

  11. আবির হোসেন Avatar
    আবির হোসেন

    এত লম্বা লম্বা কথা না বলে একবার দেশে আয়। হেফাজতের দাদায়েরা অনেকদিন রক্তের গন্ধ পায়না।

  12. আবির হোসেন Avatar
    আবির হোসেন

    তোর লেখা দেখেই বুঝা যায় তুই একটা ভারতের দালাল

  13. কাশিম আলি Avatar
    কাশিম আলি

    রাষ্ট্রকে আসলে ধর্ম মুক্ত রাখাটাই সভ্য সমাজের কাজ। ধর্ম থেকে দেশ আলাদা হবে এটাই কাম্য।

  14. লিয়াকত আহমেদ Avatar
    লিয়াকত আহমেদ

    কাফের ও মুরতাদের চিন্তাগুলো সব সময় ধর্ম হীন হয়। কেন হয় বলতে পারিস ওহে কাফেরের বাচ্চা?

  15. মেনন হাসান Avatar
    মেনন হাসান

    আমাদের চকচকে চাপাতি অপেক্ষা করছে তোর জন্য। খালি অপেক্ষা কর সেই সময়ের ও সুযোগের।

  16. বেলায়েত আহসান Avatar
    বেলায়েত আহসান

    তোরে কাইটা কুচি কুচি না করা পর্যন্ত শান্তি নাই। দেশে আয় একবার শুধু।